ITGenius24 Logo

Sunday, November 23, 2025 03:19 AM

থালাপতি বিজয়: সিনেমার পর্দা থেকে জনতার হৃদয়ে নায়ক

থালাপতি বিজয়: সিনেমার পর্দা থেকে জনতার হৃদয়ে নায়ক
"থালাপতি বিজয়—সিনেমার গ্ল্যামার পেরিয়ে জনতার ভালোবাসায় রাজনীতির নতুন প্রতিচ্ছবি।" ছবিটি অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
চেন্নাইয়ে জন্ম নেওয়া যোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর, যিনি ভক্তদের কাছে ‘থালাপতি’ বা সেনাপতি নামে পরিচিত, তিনি কেবল তামিল সিনেমার সুপারস্টারই নন, এখন জনতার নায়ক হিসেবেও আলোড়ন সৃষ্টি করছেন। গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট ২০২৫) ভারতের তামিলনাড়ুর মাদুরাই জেলায় তার নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেটরি কাজাগম (টিভিকে)-এর এক মহাসমাবেশে লাখো ভক্ত-সমর্থকের উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। এই সমাবেশে বিজয় শুধু তার উপস্থিতি দিয়েই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে সাহসী বক্তব্য দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেছেন। তিনি ঘোষণা করেন, “আমাদের একমাত্র আদর্শগত শত্রু বিজেপি। আজ আমরা ফ্যাসিবাদী বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছি।” এই বক্তব্যে জনতার উল্লাস যেন আকাশ ছুঁয়েছিল।

সিনেমার নায়ক থেকে রাজনৈতিক মঞ্চে
থালাপতি বিজয়ের এই রূপান্তর কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। তিনি তার ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকা অবস্থায় ২০২৪ সালে তামিলাগা ভেটরি কাজাগম (টিভিকে) নামে নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠন করেন। মাত্র ৮ মাসের মধ্যে তিনি তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। ২০২৪ সালের অক্টোবরে তার প্রথম জনসভার পর মাদুরাইয়ের এই সমাবেশে তিনি ঘোষণা করেন, আসন্ন ২০২৬ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে মাদুরাই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তার লক্ষ্য একটাই—জনগণের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করা। বিজয় বলেন, “রাজনীতি আমার কাছে কোনো পেশা নয়, এটি জনসেবা।”

কেন রাজনীতিতে এলেন বিজয়?
একের পর এক হিট সিনেমার মাধ্যমে বিজয় কোটি দর্শকের হৃদয় জয় করেছেন। তার সর্বশেষ সিনেমা গোট: গ্রেটেস্ট অব অল টাইম প্রথম দিনেই বক্স অফিসে ১০০ কোটি রুপি আয় করে। এমন ঝলমলে ক্যারিয়ার ছেড়ে তিনি কেন রাজনীতির মতো একটি কঠিন পথ বেছে নিলেন? বিজয়ের ভাষায়, “রাজনীতি সিনেমার মতো অভিনয়ের জায়গা নয়, এটি একটি যুদ্ধক্ষেত্র। অন্যায় ও অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতেই আমি এখানে এসেছি।” তার এই সাহসী অবস্থান তাকে শুধু ভারতের তামিলনাড়ুতেই নয়, বাংলাদেশের ভক্তদের মাঝেও জনপ্রিয় করে তুলেছে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া তার ভাষণের ভিডিওতে দেখা যায়, কমলা-হলুদ গামছা পরে তিনি জনতার সঙ্গে অভিবাদন বিনিময় করছেন, আর লাখো সমর্থকের উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে উঠছে সমাবেশস্থল।

‘জন নায়ক’ সিনেমা: পর্দার বিদায়

থালাপতি বিজয় তার ৬৯তম এবং শেষ সিনেমা জন নায়ক-এর মাধ্যমে রূপালি পর্দাকে বিদায় জানাচ্ছেন। এইচ বিনোদ পরিচালিত এই সিনেমায় তাকে দেখা যাবে একজন রাজনৈতিক নেতার চরিত্রে, যা তার বাস্তব জীবনের রাজনৈতিক যাত্রার সঙ্গে মিলে যায়। সিনেমাটি মুক্তির আগেই ১৭৬ কোটি রুপি আয় করেছে, যা বিজয়ের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। এই সিনেমার মাধ্যমে তিনি যেন পর্দায় তুলে ধরছেন তার রাজনৈতিক দর্শন, যা জনগণের সেবা ও ন্যায়ের পক্ষে লড়াইয়ের গল্প।

ভক্তদের হৃদয়ে বাস্তবের নায়ক
বিজয়ের এই সাহসী পদক্ষেপ শুধু ভারতেই নয়, বাংলাদেশের ভক্তদের মাঝেও ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনরা লিখছেন, “সিনেমার নায়ক থেকে তিনি এখন বাস্তবের নায়ক। জনগণের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।” তার এই রূপান্তর বাংলাদেশের তারকাদের সঙ্গে তুলনা করে অনেকে বলছেন, বিজয়ের সাহস ও প্রতিবাদী মানসিকতা তাকে আলাদা করে দিয়েছে। তিনি ক্ষমতার ছায়ায় না গিয়ে জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, যা তাকে সত্যিকারের জননেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।

থালাপতি বিজয়ের বার্তা

থালাপতি বিজয়ের রাজনৈতিক যাত্রা কেবল একজন তারকার রূপান্তরের গল্প নয়, এটি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। তার ঘোষণা, “আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করব,” তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। ২০২৬ সালের নির্বাচনে তার জয়ের লক্ষ্য শুধু একটি রাজনৈতিক জয় নয়, বরং জনগণের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি—সেবা ও ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকার।
আপনি কি মনে করেন? থালাপতি বিজয় কি জনতার নায়ক হিসেবে সফল হবেন? আপনার মতামত জানান আমাদের সঙ্গে। আরও আপডেট পেতে ভিজিট করুন www.itgenius24.com।