Website Logo

Sunday, July 27, 2025 02:33 PM

ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কূটনৈতিক কার্যক্রম সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। নোবেল বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ড. ইউনূস, ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন:

২০২৫ সালের ৪ এপ্রিল ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে মোদি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে বিভাজনমূলক বক্তব্য এড়ানোর আহ্বান জানান। শেখ হাসিনার শাসনামলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি ঘটে, বিশেষ করে হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে। মোদি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা:

২০২৫ সালের মার্চে ড. ইউনূস চীন সফর করেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। শি বাংলাদেশের জন্য চীনা ঋণের সুদের হার হ্রাসের বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে জানান এবং বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান স্থানান্তরের প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়াও, উভয় দেশ পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়।

রোহিঙ্গা সংকট ও আন্তর্জাতিক সহায়তা:

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনকালে মানবিক সহায়তা হ্রাসকে "অপরাধ" বলে অভিহিত করেন। ড. ইউনূস রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানান।

দেশীয় রাজনীতি ও নির্বাচন:

বিরোধী দল বিএনপি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে অস্থিতিশীলতার হুঁশিয়ারি দেয়। ড. ইউনূস ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দেন, তবে রাজনৈতিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।


সামগ্রিক চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন। তিনি তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ওপর জোর দিচ্ছেন।

ড. ইউনূসের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুনভাবে উপস্থাপন করছে। তার নেতৃত্বে দেশটি প্রতিবেশী ও বৈশ্বিক শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সচেষ্ট, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।​