আল জাজিরার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালে সরকারি নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের উপর "মারাত্মক অস্ত্র" ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রতিবেদনটি দাবি করে যে, শেখ হাসিনা তার মিত্রদের সাথে গোপন ফোন কলের মাধ্যমে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি বলেছেন, "যেখানেই তাদের পাওয়া যায়, সেখানে গুলি করো।" এই কলগুলো জাতীয় টেলিযোগাযোগ মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) দ্বারা রেকর্ড করা হয়েছিল এবং আল জাজিরার তদন্ত ইউনিট (আই-ইউনিট) এই রেকর্ডিংগুলোর সত্যতা যাচাই করেছে। অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে কোনো হেরফের হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, যদিও বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে, ঢাকার পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শবির শরীফ বলেছেন, হেলিকপ্টার থেকে হাসপাতালের প্রবেশপথ লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। তিনি আরও জানান, আহত শিক্ষার্থীদের শরীরে অস্বাভাবিক বড় আকারের বুলেট পাওয়া গেছে।
এই ঘটনাগুলোর ফলে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত এবং ২০,০০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) জানিয়েছে। শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রীসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ১০ জুলাই, ২০২৫-এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে, এবং আগস্টে বিচার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
যাচাইয়ের জন্য, একাধিক সূত্র এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ঢাকা ট্রিবিউন এবং বিএসএস নিউজও আল জাজিরার প্রতিবেদনের সমর্থনে একই তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে, আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন যে, শেখ হাসিনা কখনোই "মারাত্মক অস্ত্র" শব্দটি ব্যবহার করেননি এবং রেকর্ডিংটি সম্পাদিত বা বিকৃত হতে পারে।
এক্স-এ পোস্ট করা তথ্য অনুসারে, বিবিসি এবং আল জাজিরার মতো সংবাদমাধ্যমও এই অভিযোগগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে, শেখ হাসিনা এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই তথ্যগুলো গুরুতর হলেও, এগুলোকে চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না, কারণ এক্স-এর পোস্টগুলোতে মিথ্যা বা অনিশ্চিত দাবি থাকতে পারে।