ইসলাম ধর্ম বিনোদনকে নিষিদ্ধ করেনি; বরং এটি নির্দিষ্ট নৈতিক ও শরিয়াহভিত্তিক সীমারেখার মধ্যে বিনোদনকে অনুমোদন করে। আধুনিক যুগে বিনোদনের বিভিন্ন রূপ, যেমন—সঙ্গীত, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা এবং সামাজিক অনুষ্ঠান, মানুষের জীবনে আনন্দ ও স্বস্তি নিয়ে আসে। তবে ইসলাম এই বিনোদনের ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা প্রদান করে, যা মুসলিমদের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বিনোদন তখনই গ্রহণযোগ্য যখন তা নৈতিকতা, শালীনতা এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। উদাহরণস্বরূপ, সঙ্গীত যদি হালাল সীমার মধ্যে থাকে এবং তা মানুষের মনে শান্তি ও ইতিবাচক চিন্তাভাবনা জাগায়, তবে তা গ্রহণযোগ্য। কিন্তু যদি বিনোদনের মাধ্যম অশ্লীলতা, অনৈতিকতা বা ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থী হয়, তবে তা ইসলামে নিষিদ্ধ।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, “আর যারা ঈমান এনেছে, তাদের হৃদয় আল্লাহর স্মরণে এবং তাঁর নাযিলকৃত সত্যের মাধ্যমে শান্তি লাভ করে।” (সূরা আর-রা’দ, ১৩:২৮)। এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, বিনোদনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানুষের মনে শান্তি ও আনন্দ আনা, কিন্তু তা আল্লাহর স্মরণ থেকে বিচ্যুত করা উচিত নয়।
বিশিষ্ট ইসলামী স্কলাররা বলেন, খেলাধুলা, পারিবারিক সময় কাটানো, এবং সৃজনশীল কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা ইসলামে উৎসাহিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ঘোড়দৌড়, তীরন্দাজি এবং সাঁতারের মতো খেলাধুলা রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে উৎসাহিত করেছেন। এগুলো শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য উপকারী এবং ইসলামের শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আধুনিক সময়ে, সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তবে এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রচুর পরিমাণে এমন কন্টেন্ট রয়েছে, যা ইসলামী নৈতিকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই মুসলিমদের উচিত সচেতনভাবে এমন বিনোদন বেছে নেওয়া, যা তাদের ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ইসলাম বিনোদনের মাধ্যমে জীবনকে আনন্দময় করার সুযোগ দেয়, তবে এর সঙ্গে দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার শর্ত জুড়ে দেয়। আমাদের উচিত এমন বিনোদনের পথ বেছে নেওয়া, যা আমাদের মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির পাশাপাশি সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
www.itgenius24.com এ আরও ধর্মীয় ও জীবনধারা সংক্রান্ত নিবন্ধ পড়তে আমাদের সঙ্গে থাকুন।